মালদা

ফের ছেলে ধরা সন্দেহে বিবস্ত্র করে গণপিটুনী যুবককে, উত্তেজনা পুরাতন মালদার ছাতিয়ান মোড় এলাকায়

ছেলেধরা সন্দেহে এক যুবককে নগ্ন করে গণপিটুনি দিল উত্তেজিত জনতা। এদিন ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড় এলাকায়। ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার সময় ক্ষিপ্ত জনতা পুলিশের গাড়ির উপরেও চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তবে ওই ব্যক্তির নাম ও পরিচয় এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি।

    জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় সকাল থেকে ওই যুবককে ঘুরাঘুরি করতে দেখে এলাকার মানুষজন। ঘটনাটি দেখতে পেয়ে তাকে জিঞ্জাসাবাদ করে। তার কথায় অসঙ্গতি দেখা যায়। এরপর উত্তেজিত গ্রামবাসী বাঁশ দিয়ে তাকে বিবস্ত্র করে গণপ্রহার দেয়। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে মালদা থানার পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। তবে জেলা জুড়ে ছেলেধরা আতঙ্ক সাধরন মানুষকে অতিষ্ট করে তুলুছে। আর যার ফলে এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটে চলেছে। তবে গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

    এদিকে এই ঘটনায় এক স্থানীয় বাসিন্দা জানায়, এদিন এলাকায় একটি লোক ধরা পড়েছে। কথায় কোন সংগতি ছিল না। সেই লিক্টা এদিন এলাকার এক ছেলেকে মোবাইল টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় ধরা পরে। জিঞ্জাসা করা হলে একবার বলে সে হিন্দু একবার বলে সে মুসলিম। সন্দেহ হওয়ায় তাকে স্থানীয়রা মারধর দেয়। পরে পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

    প্রসঙ্গত,চলতি মাসের ৮ তারিখ হবিবপুর থানার আইহো এলাকার ছাতিয়ান গ্রামে শিশু চোর সন্দেহে দম্পতিকে মারধোর করা হয়। ১০ তারিখ হবিবপুর থানার মধ্যম কেন্দুয়া মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলাকে ছেলেধরা সন্দেহে মারধর। তারিখ ১৩.০৬.১৮, হবিবপুর থানা ডোবাপাড়া ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনী। পরে ওই ব্যক্তির  মৃত্যু। ১৫.০৬.১৮ ইংলিশ বাজারের অরবিন্দ পার্ক এলাকায় শিশু চোর সন্দেহে গণপ্রহার যুবককে। ২২.০৬.১৮ ইংলিশ বাজার থানার ঝলঝলিয়া এলাকায় শিশু চোর সন্দেহে যুবককে গণ প্রহার। ২২.০৬.১৮ ইংলিশ বাজারের ফোয়ারা মোড় এলাকায় বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগে চার যুবককে গণপ্রহার। ২৩.০৬.১৮ পুরাতন মালদার ছাতিয়ান মোর এলাকায়় শিশু চোর সন্দেহে এক যুবককে বিবস্ত্র করে মারধর।

    জেলা জুড়ে শিশু চুরি বা ছেলেধরা আতঙ্ক মানুষের চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। ইতি মধ্যে গ্রামে গ্রামে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুরু হয়েছে মাইকিং। তবে বাস্তবে মানুষ কতটা সচেতন হচ্ছে তা বলা বেশ মুশকিল। তবে উল্টে বাড়ছে জনসাধারণের মানসিক চাপ। যা পরিস্থিতি দাঁড়াচ্ছে তাতে ভিতি বাড়ছে গ্রামাঞ্চলের সাথে শহরাঞ্চলেও।

    এদিকে একের পর এক গণপিটুনীর ঘটনায় সরোব হয়েছে জেলার শিক্ষাবিদ থেকে সাধারন মানুষ। মালদা পলিটেকনিক কলেজের অধ্যক্ষ দেবরাজ রায় চৌধুরী বলেন, শুধু মালদা নয় গোটা দেশেই সোস্যাল সাইটের মাধ্যমে গুজব ছড়িয়ে পড়ছে। নিরিহ সাধারন মানুষকে এর স্বীকার হতে হচ্ছে। শুধু পুলিশ দিয়ে এই জিনিস আটকানো যাবে না। সাধারন মানুষ বিশেষ করে গ্রামের শিক্ষিত মানুষকে সচেতন হতে হবে। সমাজের সমস্ত শ্রেণীর মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে এজিনিস মহামারির মত ছড়িয়ে পরবে।

    সমাজতত্ব বিদ কৃষ্ণা গুহ বলেন, শুধু সামাজিক প্রচার করে এই কাজ আটকানো যাবে না। পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জন প্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। কিন্তু তারা কি করছেন ? বলে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন নিচের লিংকে

https://www.youtube.com/embed/8HHxMRVKp48